মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। এর আগে, প্রথম ধাপে ২০১৬ সালে একনেকে ডিএনডি প্রকল্পের জন্য ৫৫৮ কোটি টাকার এই মেগা প্রকল্প পাস হয়। পরবর্তীতে ডিএনডি এলাকায় নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায় প্রথম সংশোধনী)- তে বরাদ্দ বাড়িয়ে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের কার্যক্রম পরিকল্পনা করা হলেও ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্পের কর্মপরিকল্পনা থাকলেও অর্থ সংকটে অধিকাংশ চলমান কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কার্যক্রম চলাকালীন প্রায় সাড়ে ৩ বছরে প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৫০.৬৫ শতাংশ। কিন্তু আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৪১.৫৫ শতাংশ।
প্রকল্পে সম্পাদিত ১০ শতাংশ কাজের বিল যার অর্থমূল্য ১১৮কোটি ২৯ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রকল্পের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারগণ বিল না পেয়ে তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে।
এ ছাড়াও প্রকল্পের অর্থ বরাদ্ধ না পাওয়ায় প্রকল্পের বিদ্যমান উপযোগসমূহ স্থানান্তর করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ধারাবাহিকতায় প্রকল্পের খাল পুনঃখননসহ আরসিসি ব্রিজ,কালভার্ট ও ক্রস ড্রেন এর নির্মাণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ দিকে এ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৩৮টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
একের পর এক বর্ষা মৌসুম আসে যায় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হলেও ডিএনডিবাসীর জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের সুরাহা হয়নি। প্রকল্পের কার্যক্রম প্রক্রিয়া ধীর হওয়ায় প্রকল্পের নির্দিষ্ট মেয়াদে এই প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পন্ন নিয়ে সংশয়ে ডিএনডিবাসী।
বর্ষা শুরুর আগেই গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ডিএনডির অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডিএনডি প্রকল্পের আওতাধীন অধিকাংশ খালের বেশির ভাগ অংশই দখল ও ভরাট হয়ে আছে। বিশেষ করে শিবু মার্কেট এলাকায় বাজারের পয়ঃনিস্কাশন বর্জ্য ও পলিথিন ফেলে পুরো খালটি ঢেকে ফেলা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সময়মতো খালের ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যায়। বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ কার্যক্রম না থাকায় ডিএনডিবাসীর দুর্ভোগের সুরাহা নেই ।
তবে ভোগান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন ও জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ লাঘবে আশার আলো দেখিয়েছেন ডিএনপি প্রকল্প বাস্তবায়নে কর্মরত সেনা কর্মকর্তারা।
একাধিক কর্মকর্তা জানান, অর্থ সংকট থাকলেও জনদুর্ভোগ লাঘবে নিরলস কাজ চলছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রস্তত রয়েছে ২৯ টি সেচ পাস্প। প্রস্তত রয়েছে পাম্প হাউজ। প্রয়োজনে তা চালানো হবে।
চলমান প্রকল্পে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তা সাময়িক। বিগত বছরের চেয়ে এবার জলাবদ্ধতার পরিমাণ কম। আর এ সময়ে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও তার স্থায়ীত্ব খুবই কম সময়ের জন্য।
এ অবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়নের বৃহত্তর স্বার্থে সকলকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। জনসচেতন হতে হবে। যেখানে সেখানে বর্জ্য, পলিথিন ফেলা যাবেনা, পানি নিষ্কাশন খালে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না।